![]() |
চন্দ্রযান-২। ছবি (সংগৃহীত) |
অনলাইন ডেস্কঃ
মধ্যরাতে গোটা ভারত তাকিয়ে আছে তাদের সফলতা দেখতে।
এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ইসরোর কন্ট্রোলরুমে শিক্ষার্থীদের নিয়ে
উপস্থিত হয়ে লাইভ দেখছিলেন। শেষ মুহূর্তে চাদের পৃষ্ঠ থেকে ল্যান্ডারটি
কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকতেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযান-২। ইসরোর চেয়ারম্যান শিবান কে কৌল জানান, চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোয়ার কয়েক সেকেন্ড আগেই চন্দ্রায়ণ-২ এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজের গতিবেগ কমাতে ব্যর্থ হয় চন্দ্রযান ২। ফলে
সফট ল্যান্ডিং হয়নি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার
গতিবেগে চাঁদের ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার। যেখানে ৭ কিমি
গতিবেগ থাকার প্রয়োজন ছিল। এরপরই প্রধানমন্ত্রী মর্মাহত বিজ্ঞানীদের উদ্দ্যেশে নরেন্দ্র মোদি টুইট করেন। এতে তিনি বলেন, আপনাদের জন্য গর্বিত দেশ।
শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ৫৩ মিনিটে চাঁদের মাটিতে পা রাখার কথা ছিল
চন্দ্রযান-২ এর। এর আগে রাত ১টা ৪০ মিনিটে কক্ষপথ ছেড়ে চাঁদে নামতে শুরু
করে। এই অবস্থায় ‘ল্যান্ডার বিক্রম’ এর অবতরণ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। আর
মাত্র কয়েক সেকেন্ড পার হলেই রেকর্ড গড়তো ভারত। চাঁদের দক্ষিণের মাটিতে এর
আগে নামেনি আর কোনো চন্দ্রযান। যেগুলো চাঁদে গিয়েছে, সেগুলো হয় উত্তারাংশে নাহলে নিরক্ষীয় অঞ্চলে।
এতদিন সমস্ত অভিযান চাঁদের উত্তর মেরু এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে হয়েছে। এই প্রথম
ভারত উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখতে চলেছে।
এর আগে চীন থেকে পাঠানো এক মহাকাশ যান চাঁদের উত্তরের অংশে অবতরণ করেছিল। পরে অবতরণ করে রাশিয়ার লুনা মিশন। চন্দ্রযান-২ সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর চাঁদে পৌঁছানো দেশ হিসেবে ভারত চতুর্থ স্থানে উঠে আসতো। ইসরোর কন্ট্রোলরুমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এটা জীবনের
উত্থান ও পতন। এটা কম কৃতিত্ব নয়। আমি আপনাদের অভিন্দন জানাই। আপনারা সবাই
দেশ, বিজ্ঞান ও মানুষের জন্য দারুণ কাজ করেছেন, সব রকমভাবে আমি আপনাদের
সঙ্গে রয়েছি, সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলুন। পরে প্যাভিলিয়ন থেকে নেমে গিয়ে প্রচেষ্টার জন্য বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এরপর টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীদের জন্য গর্বিত দেশ। তারা নিজেদের সেরাটা
দিয়েছেন এবং সবসময়েই ভারতকে গর্বিত করেছেন। এটা সাহসে সময় এবং সাহস দেখাতে
হবে। আমরা আশাবাদী রয়েছি এবং আমাদের মহাকাশ সম্পর্কে কাজ চালিয়ে যাব। ইসরোর প্রধান শিবান কে কৌল বলেন, বিক্রম ল্যান্ডারের উত্তরণ
পরিকল্পনামাফিক ছিল এবং স্বাভাবিতক আচরণই দেখা গিয়েছিল। তথ্য বিশ্লেষণ করা
হচ্ছে। ১.৩০ থেকে ২.৩০ এর মধ্যবর্তী সময়ে অবতরণের আগে, মূল অরবিট থেকে আলাদা
হয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রম। তারপরে বেশ কয়েকটি উতরাই হয় তার। শেষের কিছুক্ষণ
সময়কে আতঙ্কের ১৫ মিনিট বলে ব্যাখা করেছে ইসরো। পৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার
দূরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সূত্র: এনডিটিভি