হেলাল মিয়া ও মৌমিতা দম্পতির ছোট্ট সংসার। আলো তাদের আড়াই বছর বয়সী একমাত্র কন্যা। বিয়ের প্রথম বছরেই ঘর আলো করে আসে আলো। তারা দুজনই একটি স্কুলে দপ্তরির কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে গিয়েছিলেন বাড়িতে। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে। ঈদের দুদিন আগে সকালে হালকা গা গরম হয় আলোর। এরপর জ্বর আসে।ডাক্তার দেখান। কিন্তু জ্বর কমেনা। তাই তারা ঈদের দিন বিকালে রওয়ানা দেন রাজধানীর উদ্দেশ্যে।
পৌঁছান ঈদের পরদিন। এসেই আলোকে নিয়ে যান ঢাকা শিশু হাসপাতালে। ধরা পরে ডেঙ্গু। সেদিন থেকেই হাসপাতালেই অবস্থান তাদের। হেলাল বলেন, আলোর মা খুব যত্নে রাখে আলোকে। ডেঙ্গুর ঘটনার পর থেকে আরো সচেতন হয়ে যায়। আমার মনে হয় বাড়ি যাওয়ার দিন লঞ্চেই মশা কামড়াইছে। আলোর বাবা জানান, সন্তানের চিন্তায় অস্থির পরিবার। শুক্রবার যখন চলন্তিকা মোড়ের বস্তিতে আগুন লাগে তখনও তারা হাসপাতালে। খবর শুনেই হেলাল ছুটে আসেন আশ্রয়স্থলে। এ বস্তিতেই তাদের বাসা।
হেলাল এসে উদ্ধার করতে পারেননি কিছুই। সব পুড়ে ছাই। এরপর রাতে রিক্ত মন নিয়েই ছুটে যান আলোর কাছে। তাদের সাজানো সংসার যে পুড়ে ছাই, তা বুঝতে দেননি আলোর মাকে। কিন্তু একটি বেসরকারি টেলিভিশনের খবর শুনে জানতে পারেন আগুনের ঘটনা। তারপরও আসতে পারছিলেন না তিনি। কারণ আলো যে হাসপাতালে ভর্তি। গতকাল দুপুরে এক পরিচিতার দায়িত্বে রেখে কিছু সময়ের জন্য আসেন বস্তিতে। পুড়ে ছাই হওয়া আশ্রয়স্থলের পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন তিনি।